সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দেশের নাগরিকদের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে কাজ করে। কিন্তু ডেটাবেজ ব্যবহার না করলে কিংবা সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে সেসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো সমন্বয় থাকে না। এ কারণে নাগরিকদের যথেষ্ট ভোগান্তি পোহাতে হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও লাখ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের সব নাগরিকদের তথ্য ও আঙ্গুলের ছাপ জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির সময় সংগ্রহ করা হয়। সরকারি কোনো একটি বিশেষ প্ৰতিষ্ঠান সেই তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কাজ করে। এখন পাসপোর্ট তৈরির সময়, সবাইকে আবার সব তথ্য পূরণ করতে হয়। দুটি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় করে ডেটাবেজের সঠিক ব্যবহার করলে এই কাজটি সহজেই এড়ানো যায়।
আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। এইচএসসি পরীক্ষা পাশ করার পরে অনেকেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যায়। সেখানে তাকে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করা সহ নানা ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। শিক্ষাবোর্ডের কাছে কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর তথ্য ও তার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা আছে। এই ডেটাবেজের সঠিক ব্যবহার করলে আর আলাদা রেজিস্ট্রেশন ফর্মে একই তথ্য দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এই কাজটি করে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ করেছে। এরকম শত শত সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনেক কাজ হয়, যেখানে ডেটাবেজ ব্যবহার ও সঠিকভাবে সমন্বয় করলে অনেক কাজ অনেক কম সময়ে ও কম ঝামেলা করে সম্পন্ন করা যায়।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজের আরেকটি ভালো ব্যবহার হতে পারে ডেটা-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া চালুর মাধ্যমে। ঠিকভাবে বিভিন্ন রকম ডেটা সংরক্ষণ করলে, সেই ডেটা ব্যবহার করে ভবিষ্যতে কোন কাজটি কখন করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে যায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি—এসব ক্ষেত্রে বিগত বছরের ডেটা ব্যবহার ও বিশ্লেষণ করে অনেক তথ্য বের করা সম্ভব, যা পরবর্তী বছরের করণীয় নির্ধারণ করতে সহায়তা করে। যেমন— বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের রোগীদের তথ্য যদি একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে থাকে, তাহলে কোন সময়ে, কোন অঞ্চলে কোন রোগের প্রকোপ বেশি হয়, তা সহজেই নির্ণয় করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রয়োজনীয় ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি কাজ করে ফেলা সম্ভব।
সরকারি প্রতিষ্ঠানে ডেটাবেজ ব্যবহারের মূল চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিপুল পরিমাণ ডেটার ব্যবস্থাপনার জন্য দক্ষ লোকের সরবরাহ নিশ্চিত করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেন একই ডেটা আলাদাভাবে ব্যবহার না করে (বরং নিজেদের মধ্যে ডেটা আদান-প্রদান করতে পারে), সেটির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
Read more